সোমবার, মার্চ ২৬, ২০১২

আমার ৪০ বছরের স্বাধীনতার স্বাদ কেমন!

লেখক: মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খ: জাহিদ মাহমুদ (কাদেরিয়া বাহিনী)
http://amarbornomala.com/uploadedimage/9336victory-day1.jpg

বিজয় পেয়েছি ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে৷ আজ ২৬শে মার্চ ২০১২ অর্থাত্‍ স্বাধীনতার ৪০ বছর পূর্ণতা পেয়েছে৷ এই ৪০, অনেকটা গুরুত্ব বহন করে৷ মুসলিম হিসাবে মনে-প্রাণে, চিন্তা-চেতনায় সবসময় ৪০কে আলাদা ও বিরাট গুরুত্ব দিতে চাই৷ আমরা জানি সম্মানিত হাজ্বীগণ হজ্ব শেষে মসজিদে নববীতে চল্লিশ ওয়াক্ত নামায আদায় করেন৷ চল্লিশ দিনের এক চিল্লায় আল্লাহর রাস্তায় মানুষকে আহবান জানানো ৷ শুধু তাই নয়, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ( সা: ) এর জীবনে নবুয়াতপ্রাপ্তি ঘটে ঠিক ৪০ বছর বয়সেই৷ না আগে আর না পরে৷ নাযিল হয় আল্লাহর বিধান মহান গ্রন্থ কোরআন শরীফ৷ 

আজ তাই জাতির জনক কর্তৃক ঘোষিত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসাবে চল্লিশ উর্দ্ধ বয়সে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে কিছু প্রশ্ন এবং তার উত্তর জানতে চাই৷ কেন ৭ই মার্চ স্বাধীনতা দিবস হলো না! হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বীর বাঙ্গালীকে ৭ই মার্চ এর ভাষণে বাংলার মাটিকে স্বাধীন করবার আহবান জানানো হয়েছিল, কেন এই ৭ই মার্চকেই স্বাধীনতা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হলো না, আমি বুঝিনা৷ বুঝতে চাই৷ কেন ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে "জয় বাংলা" স্লোগান দিয়ে শত শত রাজাকার ও সুবিধাভোগীরা বিজয় মিছিলে যোগ দিয়ে রাতারাতি মুক্তিযোদ্ধা বনে গেল আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ঘর-হারা, মা-বাবা, সংসার হারা হলো? বাড়িঘর লুটতরাজ, আগুনে পুড়ে সর্বশ্রান্ত হয়ে দিশেহারা দুঃস্থ্য বনে গেল? যেন তাদের দেখার, লালন-পালন করবার কেহ নেই! তাদের দুঃখে সাথী হবার কেউ নেই! নিদারুন সেই যন্ত্রনায় কাতর বীরেরা সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়, যখন বর্বরদের মত হাতিয়ার জমা দেয়৷ তারা একদিকে বিজিত অন্যদিকে পরাজিত৷ তাদের সাথে ঘটা ঘটনা বা রটনাকে মর্মান্তিক বলা ছাড়া উপায় নেই৷ অবশ্য অন্যদিকে পরাজিতদের পোয়া বার! তাদের ভালো মন্দ খাবারের সুব্যবস্থা এবং সৌদি সরকার প্রায় ৯৩ হাজার পরাজিত সৈন্যদের তাদের দেশে পুর্নবাসিত করলেন৷ ভালো বেতন, বাসা-বাড়ি সব৷ আর যারা ইতিহাস গড়লো! তারা কি পেল? যুদ্ধে যাওয়ায় পরিবার ধ্বংস, বসত বাড়ি ধ্বংস! যেদিকে তাকায় শুধু ধ্বংসের স্তুপ৷ তাদের আগলাবার কেউ নেই৷ যেইনা হাতিয়ার জমা নেয়া হলো ওমনি সেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ১০/২০ টাকা দামের সনদপত্রের মালিক বনে ঘৃণায়, লজ্জায় বিপর্যস্ত হয়ে হতবাক৷ তারা মূল্যহীন আর্বজনায় পরিনত হলো হাতে গোনা গুটি কয়েক সুবিধাভোগী ছাড়া৷ 
http://amarbornomala.com/uploadedimage/66712012-03-25__f01.jpg

৪০ বছর পর উত্তর খুঁজে বেড়াই, ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে যে প্রশাসন বর্বদের নির্দেশ মেনে প্রতিযোগিতাতে নেমেছিল, আবার তারাই বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রশাসনে থাকে কি করে? মাত্র কয়েকটা দিনের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র জমা নিয়ে বীরদর্পে প্রশাসনে বসে গেলেন! চালানো শুরু করল তাদের প্রকৃত পিতাদের নির্দেশে অতি গোপনে, সন্তপর্ণে ষড়যন্ত্র৷ ষড়যন্ত্রে দিশেহারা করে দিলেন বঙ্গবন্ধুকে৷ সশস্ত্র যুদ্ধে স্বাধীনতা পাবার পর সেখানে পরাহিতদের দেশের প্রশাসনে বসানোটাকে কত বড় ভুল হয়েছিল না কী হয়েছিল তা কি এখনো মূল্যায়নের সময় আসে নাই? এর উত্তর জানতে চাই৷ লুটতরাজ কারা করেছিল? দেশে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ কিভাবে হয়েছে? মজলুম জননেতা ভাসানী হুজুর, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ, সেক্টর কমান্ডার আব্দুল জলিল, কর্ণেল তাহের, ইসতেহার পাঠক শাহজাহান সিরাজ, আ.স.ম. আব্দুর রব, সিরাজুল আলম খান, কমরেড মনিসিংহ, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার এর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তারা কোথায় ছিটকে পরলেন? এগুলো কি সেই রাও্ফরমান আলীর প্রশাসনের চামচাদের নিরবে, গোপনে বিষাক্ত ছোবলের কারসাজি ছাড়া অন্য কিছু? জানতে চাই, জানার খুব ইচ্ছে৷ 

এজন্যেই কি স্বাধীনতা বিরোধী চক্র শাহ আজিজ, আব্দুর আলিম, আব্দুর রহমান, নিজামী, মুজাহিদ এদের গাড়িতে রক্ত লাল সবুজ পতাকা উড়ে! একারণেই কি দেলোয়ার হোসেন শিকদার, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, রাজাকার বলে গর্ববোধ করে ও পবিত্র পার্লামেন্টে সম্মানিত সদস্য পদ লাভ করে! এর সমাপ্তি কি ৪০ এর পরে আমরা দেখতে পাবো? জাতি জানতে চায়, আমি দেখতে চাই৷ 
যুদ্ধ বিধ্বস্ত, সর্বক্ষেত্রে ধ্বংসের স্তুপ থেকে দেশকে গড়ার জন্য দেশ থেকে দেশান্তরে দিন ও রাতের ঘুম হারাম করে জাতির জনক যখন দেশকে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নে বিভোর, তখন টিক্কা / রাওফরমান আলীর প্রশাসনের চামচারা দেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থতার চরমে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্রে পূর্ণ কার্যকর ভূমিকা পালন করছিল অত্যন্ত সন্তপর্ণে, নিরবে নিভৃতে৷ 

http://amarbornomala.com/uploadedimage/61964-leaders.jpg
জাতির প্রকৃত শ্রেষ্ঠ সন্তানরা যে ছাত্র সে শিক্ষালয়ে, যে শ্রমিক সে কারখানায়, যে কৃষক সে ক্ষেত খামারে, যে পুলিশ সে পুলিশ বাহিনীতে, যে আর্মি সে আর্মিতে আর গুটিকয়েক সুবিধাভোগী রক্ষিবাহিনীতে আশ্রয় নিয়েছিল৷ যুদ্ধকালীন সময়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মৃত্যুকে জয় করে রক্তের বাঁধনে বাঁধা ভাই হিসাবে যারা স্বাধীনতা এনে বাংগালীকে সারা বিশ্বে বীর জাতি হিসাবে পরিচিত করলো, তাদেরকে চক্রান্তকারীরা বিভক্ত করে একে অপরের রক্তে রঞ্জিত হওয়ার প্রতিযোগিতায় নামিয়ে অতি চাতুরতার সাথে দেশকে ক্ষত-বিক্ষত করে, জাতির জনককে সপরিবারে শহীদ করে দেশকে নেতা শুন্য করে দিল৷ উন্নয়নের যাত্রাকে স্তদ্ধ করে দেশ ও জাতিকে করলো কলংকিত৷ থেমে রইল না ওদের ষড়যন্ত্র৷ ওদের সুকৌশলে ফাসিকাষ্ঠের প্রায় ৭০০ আসামীসহ, ১১৫০০ জন যুদ্ধাপরাধী ছাড়া পেয়ে গেল জেল থেকে৷ জাতি যেন ঘুরে দাঁড়াতে না পারে তার জন্য ৪ নেতাকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান জেলখানা, সেখানেই তাদেরকে নির্মমভাবে শহীদ করা হলো৷ একি! এইকি আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ! আজ চিত্‍কার করে বলতে ইচ্ছে করে মীরজাফর, ইয়ারলতিফ, জগত্‍শেঠ, উমিচাঁদ ঐসব বেঈমানদের যে, হায়রে! তোমাদের মহামতি স্টালিনের মত করে যদি বাংলার পবিত্র মাটি থেকে উচ্ছেদ করে দিতে পারতাম, যাতে করে তোমাদের রক্তও যেন দেশের মাটিতে না পরতো! 
রাশিয়া, চিন, ভিয়েতনাম, উত্তর কোরিয়া, কিউবা, মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত ওরাতো ভালই আছে৷ আমরাও জাতির এই কলংক মুছে ভালো হতে চাই৷ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই৷ 

"যৌবন যার যুদ্ধে যাবার সময় তার"৷ 

হে তরুন প্রজন্ম, তোমরাই পারবে জাতিকে কলংকমুক্ত করতে, জাতি হিসাবে দেশকে বিশ্ব সভায় সম্মানিত করতে, লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে অর্থবহুল করতে৷ জাতি হিসাবে আমরা বীর, কাজেই কোন রক্ত চক্ষুকে ভয় পাবার কিছু নাই৷ কে আছো বীর, ধনুকে লাগাও তীর৷ ছি্ন্ন ভিন্ন করে দাও যত সব ষড়যন্ত্র এই হোক ৪০ বছরের স্বাধীনতার মূল মন্ত্র৷ 
সকল জঞ্জাল ও কলংক ধুয়ে মুছে পুত ও পবিত্র হোক এই দেশ৷ জাতি হোক গর্বিত৷  

মঙ্গলবার, মার্চ ২০, ২০১২

আমাদের দেশ....আমাদের সত্ত্বা.....(২)

স্বাধীনতার এই মাসে....আরো এক বিজয়ের উল্লাস...... 



ক্রিকেটের অন্ধ ভক্ত না নই তবে হ্যাঁ, দেশের খেলা বাদ দিতে পারিনা৷ কখনো কখনো দুর্দান্ত রকমের খারাপ খেললেও টিভির পর্দা থেকে বিরক্তি নিয়ে মুখ ফিরিয়েও যাইনা৷ শ্রীলংকার গত কয়েকদিনের পার্ফরমেন্স দেখে কিছুটা আন্দাজ করছিলাম আমাদের সুযোগ বুঝি আছে৷ ইন্ডিয়া জিতে যাওয়াতে যদিও অনেক ভয় পেয়েছিলাম৷ তবে এখনতো....৷ 

যখন জিতে গেলাম....প্রথমেই যে কথাটি মনে হলো...এটা আমাদের মহান স্বাধীনতার মাস। অনেক আবেগের, বহু ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া৷ আর এই মাসেই কি না আবারো এক পদকের জন্যে মুখোমুখি হতে যাচ্ছি সেই পাকিস্তানের সাথেই! বংশানুক্রমে হিংসা পোষণ করে রাখার পক্ষপাত্বিত্ত করিনা তবে হ্যাঁ, তাই বলে অপমানও ভুলে যাবো এমনটা নই৷ বলবনা যে, কালের পর কাল ৭১' সেই জ্বালার শোধ তুলতেই থাকবো৷ ভ্রাতৃত্ববোধে বিশ্বাস করি৷ কিন্তু আত্মসম্মানবোধ বিকিয়ে দিয়ে ভ্রাতৃবোধ পালন করার কোন ইচ্ছে নেই। 
আজ বাড়ির পাশের রাস্তায় যখন উল্লাসের ধ্বনি কানে এলো, মনে হলো এই স্বাধীনতা মাসটি আমাদের কাছে যেন আরো উজ্জ্বলভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকার জন্য তাগিদ দিচ্ছে৷ সেই যে খেলছি ১৯৮৬ থেকে, বিজয়ের স্বাদ কোনভাবেই নিতে পারছিলামনা৷ কাজেই আজ যা হলো, এটাকে কি কোইনসিডেন্স বলব না কি বলব, জানি না৷ মুখোমুখি হচ্ছি সেই পাকিস্তানের সাথেই৷ 

আর তাই আজ আমি, বাতাসে স্পষ্টভাবে এই স্বাধীনতার মাসে আরো এক বিজয়ের উল্লাসের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছি৷ আর আমার বিশ্বাস.....না আমরা নিরাশ হবো আর না বিধাতা আমাদের নিরাশ করবে৷

জয় বাংলা....
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ৷



সংক্ষিপ্ত স্কোর: 
শ্রীলঙ্কা: ৪৯.৫ ওভারে ২৩২ (জয়াবর্ধনে ৫, দিলশান ১৯, সাঙ্গাকারা ৬, কাপুগেদারা ৬২, থিরিমান্নে ৪৮, থারাঙ্গা ৪৮, মাহারুফ ৩, কুলাসেকারা ১, সেনায়েকে ১৯*, মালিঙ্গা ১০, লাকমল ০; নাজমুল ৩/৩২, রাজ্জাক ২/৪৪, সাকিব ২/৫৬, মাশরাফি ১/৩০)  

শনিবার, মার্চ ১০, ২০১২

আমাদের দেশ....আমাদের সত্ত্বা.....(১)

মার্কিন সৈন্যের আগমন: 
মার্কিন সৈন্যের কোন ক্যাম্প আমাদের দেশে অবস্থান করাটাকে কি দৃষ্টিতে দেখা যায? আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ডভাবে জীবনহুমকির অবস্থায় আছেন?? প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সুসজ্জি্বত বাহিনী আছে৷ ইন্ডিয়ার (আসল নাম যে কি...ভারত, হিন্দুস্তান নাকি ইন্ডিয়া!! খুব দ্বিধা নিয়ে বললাম আর কি!!) গোয়েন্দা বাহিনী "র" এর সাথে এখন তাহলে মার্কিন সেনাও যুক্ত হলো! হঠাত্‍ তার জীবনের উপর এতো হুমকি নেমে এলো? 

হাস্যকর লেগেছিল, কাস্টমে যখন বিনা অনুমতিতে আর্মস নিয়ে আসার সময় বাধাগ্রস্থ হয় এই মার্কিন বাহিনী৷ গোমড় ফাঁস হয় তখনই৷ এর আগ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি এই সেনাদের আগমনের সম্পর্কে৷ যদি এদেশীয় সৈন্যদের ট্রেনিং এর উদ্দ্যেশেই আগমন ঘটে থাকে তবে কাস্টম অফিস আগের থেকেই এর সম্পর্কে অবহিত থাকত৷ কিন্তু আমার কথা ট্রেনিং দেবার জন্য তাদের আর্মস নিয়েও আসতে হয়?? 
তবে মার্কিনি কূটনীতিদের জবাবগুলো অভিনব ক্রিটিকালভাবে দেয়া ছিল...আমাদের শেখা দরকার৷ 


সমাবেশ করতে দিক: 
প্রথম কথাই বলব, সমাবেশ করতে চাইলে এতো তত্‍পর হয়ে বাধা দেবার মানে কি? আওয়ামীলীগের ভয় না পাবার প্রথম কারণ তারা জনসমর্থিত স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী অনেক বড় একটি দল (তাদের ভাষ্য অনুযায়ী)! তবে এতো চিন্তা কিসের? নাশকতার সৃষ্টি?? তাহলে পিলখানা হত্যাকান্ডের সময় কি করছিলেন তিনি? এক সমাবেশকে কেন্দ্র করেই প্রায় ২০০০ এর উপরে ধরপাকড় শুরু করেছে, রাস্তায় রাস্তায় চেকিং, রিকসা থেকে নামিয়েই অ্যারেস্ট, পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া আরও কত কি....তবে পিলখানায় এতো বড় কান্ড হয়ে যাবার পর আভ্যন্তরীন সব রুট চালু তো রেখেছিলই বরং বৈদেশিক রুটগুলোও খোলা ছিল৷ পুলিশের ভাষ্যমতে, কোন সমাবেশ উদ্দেশ্য করে এই ধরপাকড় হচ্ছেনা৷ তবে একসাথে হঠাত্‍ করে এমন উন্মাদের মত ধরছেন কেন মানুষ? ছোট কে না বড় ভাই, তো বড় কে না পেলে ছোট!! আর জামিনের জন্য ১৩ই মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে! 

পুলিশ কর্মকর্তারা বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রগুলোর পরীক্ষা চালাচ্ছে৷ কেন? গুলিবর্ষণ করবে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাতাসে লাশের গন্ধ কিন্তু এখন ভেসে ভেসে আসা শুরু করেছে....টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ এক বিষয়, কিন্তু বুলেট নিক্ষেপ! মানুষ মারার পরিকল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়৷ 

১২ই মার্চ সমাবেশ তখনই সুষ্ঠুভাবে হবে যখন সরকার পক্ষ থেকে কোন বাধা তৈরি করা না হবে৷ অন্যথায়, রণক্ষেত্র তৈরি সরকারই করে দেবেন৷ প্রধান বিরোধিদল সমাবেশ করুক, সমস্যা কি!! তারা সংবিধানের পবিত্রতা নষ্ট করছে, সংসদে এসে দেশের উন্নয়নের কথা বলতে গেলে মান চলে যায়, সমাবেশ ছাড়া জনগনকে জানাতে নারাজ...তো করুক এই সমাবেশ৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলছি..আপনি আপনার উদারতা দেখান৷ গণতন্ত্রের প্রতি আপনার শ্রদ্ধা, চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিন৷ নিজের পেশীশক্তি দেখাতে গিয়ে অনুগ্রহপূর্বক জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলবেন না৷ কোন লাশ যেন পরে সেটা নিশ্চিত করুন৷

এলোমেলো ভাবনাগুলি......৯


পিশাচ আমি

পিশাচ আমি। আমি মাতালের মত ঢুলছি, চোখ লাল, কথা জড়ানো। নাহ! কোন তরল নিংড়ে এই রুপ নেই নি।
আমি ঘৃণা করি...
প্রসাধন,
আবরণ,
মিথ্যেবাদীর মুখোশ।
আমার প্রলেপহীন পিশাচের রূপ।
পৃথিবী নিরপরাধ, কোথায় দাগ আছে দেখাও!!
আমার জন্ম নেয়াটা পাপ, আমার রূপ কুৎসিত, কলংকিত আমার কর্ম।
পলাতক পাপী আমি খুঁজে বেড়াই...
আমার গায়ে সাপের মত পেচিয়ে থাকা কদর্যতা, লেগে থাকা দূর্গন্ধ ঢাকার জায়গা।
বেচারা পৃথিবী....তার রাতের অন্ধকারের চাদর দিয়ে আঁড়াল করার বৃথা চেষ্টা করে।
আর আমি হাসি...
আমার পিশাচ আত্মা, ফায়দা লুটে।
তান্ডব করে জন্ম দেয়, কানফাটা চিৎকার, বিদীর্ণ আর্তনাদ।
শুধুই আর্তনাদ!!

মঙ্গলবার, মার্চ ০৬, ২০১২

গাঁজাখোর....চোপ্ যা.......

হাইকোর্ট থেকে রায় বের হলো বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চা...যাকে বলে বাহিংলিশ বন্ধকরণ চর্চা চালাতে হবে৷ ভালো কথা, সমালোচনা করতে আজকাল আর ভালোও লাগেনা যেখানে প্রভাবিতই করার কোন উপায় নেই সেখানে কিছু বলাটা "কচু পাতার পানির মতন"!!




আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবিরা খুব সুন্দর করে ব্যখ্যাও দিলেন কেন আমাদের প্রমিত বাংলা, যাকে বলে শুদ্ধ করে বলাটা উচিত্‍৷ বিভিন্ন টকশোগুলোও এরকম বিষয়ের উপর টকশো করার সুযোগও পেয়েছে, ফায়দাও হয়েছে অনস্বীকার্য৷ ভাষার মাসে এধরনের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানানো ছাড়া কোন উপায়ই নেই কিন্তু কতটুকু কার্যকর হচ্ছে এটা দেখার বিষয়৷ 


আমাদের দেশে আইন হয়, বিচার হয়, রায়ও বের হয়৷ কিন্তু কার্যকর হওয়াটা হাতে গোনার মত৷ এত কথার হেতু, একটি দেশের সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব বা আচরন কেমন হওয়া উচিত্‍ বলে আপনি মনে করেন? অবশ্য আমাদের দেশের সার্কাসের ন্যায় সংসদ নিয়ে কিছু প্রশ্ন তোলাও হাস্যকর এবং সমুচিত হবে কি না তাও চিন্তা করছি! আমাদের দেশের মহান নেতারা এখানে এসে কিছু সময় যে ব্যয় করেন, এটাই আমাদের মাথার তূল্য৷ আহা, সেখানে হোক্ না কেন একটু আধটু খরচ৷ আমরা দেশের জনগন, সাধারণ জনগন কামাই তাহলে কি জন্যে!! 

কোন কথা বলতে গিয়ে কোন কথা বলছি, কথা হচ্ছে হেসে গড়িয়ে পরবার একটা খোরাক দেখলাম এটিএন নিউজের আনকাট এ৷ তা হলো, এখন থেকে নাকি কোনও মন্ত্রীদেরই কাগজে বার্তা বা নোটিশ দেয়া হবেনা৷ অর্থাত্‍ কাগজ পাঠানো হবেনা৷ ই-মেইল এ প্রেরণ করা হবে! প্রযুক্তিবান্ধব করবার লক্ষ্যে। সাধু....সাধু৷ এতে আমার কোন সমস্যা নেই৷ কথা হচ্ছে, দেখার মত ছিল আমাদের মাননীয় স্পিকারের ভাষ্য!! যেমন: "ওই যে, ওইডা জানি কি?? হাতে নিয়া ঘুরে? ল্যাপটপ! ল্যাপটপ নিয়া নিবেন এহন থিকা৷ সবাই একটা কইরা৷" কি সুন্দর চর্চা করছেন সংসদে বসে!! ভাবছি, রেডিওগুলোকে দোষ দেয়াটা, মোটেও ঠিক হয়নি। 

এর ভিডিও লিংকটা খুঁজে পেলাম না৷ তাহলে মজা পেতেন, একশভাগ গ্যারান্টি সহকারে৷ 
http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?id=187666&cid=3 

এই গাঁজাখোর স্পিকার সংসদের বসে বাংলা ভাষাকে অপমান করে গেলেন... রায় বের হবার পরও৷ শুদ্ধ করে কথা বললে তো সমস্যা, কেননা উনি তো এখন সার্কাসে অবস্থিত!! 

বলতে ইচ্ছে হচ্ছে "গাঁজাখোর........ তুই চোপ যা৷"

শনিবার, মার্চ ০৩, ২০১২

এলোমেলো ভাবনাগুলি....৮


শব্দদূষণ করব......
মনে হচ্ছে শব্দদূষণে স্বকীয়ভাবে অংশ নেই৷ নিংড়ে দেই যা আছে ভেতরটাতে৷ অবাধ্য সব শব্দগুলোকে বলি..."এ্যাটেনশন!!" বিতর্কিত হয়ে নাম কুঁড়াবার ইচ্ছেতে নয়! মন খুলে ঝেড়ে দেখবো নিজের আসল রুপ৷ আসল আয়নাতে দেখব, আসল রুপ৷ এই হাইলাইটিংস, জাঁকজমক, চকচকে আয়নাগুলো এমন চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছে যে, আই ড্রপার ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নেই৷ কাজেই.... শব্দ দূষণ করব৷
একদিন স্বইচ্ছেয় অন্ধ হয়েছিলাম, পাছে লোকে সার্থপর ভাববে বলে৷ আর এখন দেখছি অন্ধত্বও ফ্যাশান হয়ে যাচ্ছে৷ "কি করি আমি, কি করি আমি, কি কি কি কি করি???"
গোবরে পা ডুবিয়ে আমার মন্দিরে এসে বল, ছিঃ ছিঃ, কি নোংরা তোমার চারপাশ?? উত্‍কট গন্ধ আসছে??
আরে যাহ্, গঙায় স্নান করে আয়৷ চোখে পিচুটি লেগে আছে বলেই দেখতে পাচ্ছিস না...আমার মন্দিরের বেদীতে শুভ্রতায় গড়া আমার প্রতিমা৷ যেখানে প্রদীপ তার নিচেই অন্ধকার করে জগত্‍ আলো করতে চায়, আর সেখানে আমার মন্দিরে তো তুই কলংক নিয়েই আসবি! যাক্ গে, রুপ প্রকাশ হবে আমার৷ পঙ্কিলতাকে যে ঢেকে দিতে পারে, সেই শুভ্রতার পরিচয় তখনই প্রকাশ পায়৷ কিন্তু আজ শব্দ দূষণ করতে গিয়ে দেখি, স্বইচ্ছেয় অন্ধ হবার সময় বাক্শক্তিটাকেও হারিয়েছিলাম৷ কোথায় যে হারিয়েছি, খুঁজে আর পাচ্ছিনা৷ আর তাই তো দেখি আমার শব্দগুলোও বোবা৷ অসহ্য গোঙানীর আওয়াজ আসছে....সবসময়৷ কপাল! শ্রবণশক্তিটাও গেলনা কেন যে!!!
বোবা বলে কি আমার সামনে শুধু গেয়েই চলবে?? ভেবনা৷ গলা যখন শুকিয়ে যাবে...জল তখন আমিই দেব৷ এমন বিষ মেশাবো....তোমার চিত্‍কারই তখন হবে শব্দ দূষণ৷ আমি হাসবো বোবা হাসি আর আমার অপচ্ছায়া তখন পাষন্ডের মত তান্ডব করে দূষণ করে যাবে৷
ওহ্ হো!! আমার শ্রবণশক্তি তবে এরই অপেক্ষাতে ছিল!

তুমি অপেক্ষায়!!! আর আমি জ্বলছি এখানে... ("তারপরও অপেক্ষায়".....এর প্রতিধ্বনি)

কিছু কিছু সময় এমনও থাকে যখন অনুভূতিগুলোর উপস্থিতি এতটা প্রকট করে বোঝার পরও যখন বর্ণনা করার ইচ্ছে জাগে, শব্দগুলোকে আর খুঁজে পাওয়া যায়না৷ আর সাজানো যায়না অনুভূতিগুলোকে। রং সব হারিয়ে যায়৷ শুধু থেকে থেকে যন্ত্রনাময় আবেগগুলো সূঁচের মত খোঁচা দিয়ে বলে, "আমি আছি, একান্তই..... তোমার৷" 




কিছু স্মৃতি আজ খুব তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে, একাকী বোবা চিত্‍কারে নিজেরই দম বন্ধ৷ স্মৃতিগুলোতো একা আমি গড়িনি! ইচ্ছে হচ্ছে ইথানের দ্বারা জানিয়ে দেই...আমি জ্বলছি৷ ভীষণভাবে। 

আমি তোমার মত জানিনা কাঁদতে ক্রীতদাসীর মত! আমি জানি শুধু নিতে আর নিতে৷ জানি শুধু দমিয়ে রাখতে৷ জানি শুধু, তোমার পছন্দের রংধনু দিয়ে আনন্দ সাজাতে৷ তোমার সামনে দিয়ে বলব, "নাও তোমার আনন্দ...খুশিতো!" আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা থাকলেও, বৃষ্টির প্রতিটি বিন্দুকে গায়ে লাগিয়ে শেখাতে, "এর মাদকতাময় আচ্ছন্নতাও তো লাগে জীবনকে উপভোগ করতে! উপভোগ কর"৷ বিশ্বাস কর, তোমার হাতে গোলাপ আমি দেব, কিন্তু কাঁটা থাকবে আমার হাতের চাপে৷ ভয় পেওনা, রক্ত আমার ঝরবেনা৷ ভেঙ্গে দেবো সেই কাঁটা৷ কি করব বল, আমার ভালোবাসা বন্য৷ আমি উন্মাদ৷ 

আর এখন জ্বলছি!!!.....কেননা.... 
এখন পারছিনা সূর্যকে শাসন করে তার আলো দিয়ে তোমার কষ্টের অন্ধকার দুর করতে৷ যারা দাপটে থাকে, নি:সঙ্গতাকে বড় ভয় তাদের৷ তাই নি:সঙ্গ হয়ে জ্বলছি৷ 


আমার অহং, আমার আমিত্বকে সার্থক করেছিলে তুমি........... ক্রীতদাসী হয়ে৷